উষনি শাক
উষনি শাক হচ্ছে গুল্ম প্রজাতির Asteraceae পরিবারের একটি উদ্ভিদ। এর বোটানিক্যাল নাম Acmella oleracea।বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকায় এই কুড়িয়ে পাওয়া শাকটির তেমন কোনো একক নাম নেই যে নামে সবাই একে চিনতে পারে। দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয়দের ভেতর এই শাকটি উষনি শাক নামে পরিচিত। ময়মনসিংহের হাজং আদিবাসীরা এই শাকটিকে কালানাগুনি, উখলিপাতা নামে ডাকেন।পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমাদের ভেতর অতি প্রিয় এই শাক ওজোন শাক নামে পরিচিত। মৌলভীবাজারের ওঁরাও আদিবাসীদের ভেতর শাকটি দুরুখ বাকু নামে পরিচিত।
উষনি শাক Acmella oleracea | |
---|---|
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | Plantae |
শ্রেণীবিহীন: | সপুষ্পক উদ্ভিদ |
শ্রেণীবিহীন: | Eudicots |
শ্রেণীবিহীন: | Asterids |
বর্গ: | Asterales |
পরিবার: | Asteraceae |
গণ: | Acmella |
প্রজাতি: | A. oleracea |
দ্বিপদী নাম | |
Acmella oleracea (L.) R.K.Jansen | |
প্রতিশব্দ[১] | |
|
বর্ণনা
সম্পাদনাউষনি শাক বাড়ীর আশে পাশের পতিত জায়গায়, বাঁশ ঝাড়ের আশেপাশে, স্যাঁতস্যাতে জায়গায়, কলার বাগানের ঝোপ ঝাড়ে পাওয়া যায়। পাহাড়ি এলাকায় জুমের জমিতে এই শাক বেশি দেখা যায়।
উষনি শাক কিছুটা ঝাঁঝালো স্বাদের হয়। বর্ষাকালে গাছের আকার বেশ বড়সড় হয় এবং পাতায় ঝাঁঝালো গন্ধ ও স্বাদ কম থাকে। প্রায় সারা বছরই দেখা যায়। পাহাড়ি এলাকায় জুমে ফসল বোনার পর পরই কচি চারা গুলো গজিয়ে উঠে এবং কচি শাক খেতে ভালো।
উপকারিতা
সম্পাদনাসাধারনত শরীরে বিষ ব্যাথা হলে এই শাক খেলে উপকার পাওয়া যায়। এই শাক আতুঁর ঘরে সন্তান প্রসবের পরে মাকে খাওয়ানো হয় শরীরের ব্যাথা কমানোর জন্য। দাঁত ব্যাথা সারাতে এই শাকের ফুলের রস ব্যবহার করা হয়। এটি মূত্রবর্ধক, তাই শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল ও বিষাক্তদ্রব্যাদি দূর করতে এটি বিশেষ ভূমিকা রাখে। এর শক্তিশালী প্রদাহবিরোধী(anti-inflammatory) ক্ষমতা বাত ও টিস্যুর প্রদাহ কমাতে দারুন কার্যকরী। এছাড়া এটি অ্যাজমা, এলার্জি এবং ব্যাথা সারায়। সংক্রমণ সৃষ্টিকারী বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ছত্রাক ধ্বংস করে ফ্লু(flu), যক্ষ্মা, দাদ(ringworm) এসব থেকে রক্ষা করে। এই শাকে অনেক ধরনের ফ্যাটি এসিড আছে যা বিভিন্ন কার্ডিওভাসকুলার রোগ, স্ট্রোক এবং এমনকি ক্যান্সার প্রতিরোধী। উষনি শাক রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ও দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি (Chronic Fatigue) সারায়। এই উদ্ভিদ তার অ্যান্টিএজিং উপাদানের জন্য প্রসাধনী তৈরিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
গুণাগুণ
সম্পাদনাএ শাকে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম আছে। এছাড়াও এতে বিভিন্ন ফ্যাটিএসিডের উপস্থিতির পাশাপাশি ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম প্রভৃতি খনিজ পুষ্টিউপাদান সমূহ থাকে।
সতর্কতা
সম্পাদনাকিছু ক্ষেত্রে এলার্জি সৃষ্টি করে।