খনা

জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী নারী যিনি বচন রচনার জন্য বেশি সমাদৃত

খনা বা ক্ষণা ছিলেন জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী এক বিদুষী বাঙালি নারী; যিনি বচন রচনার জন্যেই বেশি সমাদৃত। মূলতঃ খনার ভবিষ্যতবাণীগুলোই বঙ্গে 'খনার বচন' নামে বহুল পরিচিত।

খনা
খনা - প্রচার পুস্তিকা
খনা - প্রচার পুস্তিকা
জন্মআনু. অষ্টম-দ্বাদশ শতাব্দী
বঙ্গ
পেশাকবি, জ্যোতির্বিদ
ভাষাবাংলা
সময়কালপাল সাম্রাজ্য
উল্লেখযোগ্য রচনাবলিখনার বচন
দাম্পত্যসঙ্গীমিহির
 
খনামিহিরের ঢিবি, চন্দ্রকেতুগড়

মনে করা হয় বঙ্গে পাল সাম্রাজ্যের শাসনামলে অর্থাৎ ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে তার আবির্ভাব হয়েছিল।[] কিংবদন্তি অনুসারে তিনি বাস করতেন অধুনা পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসাত মহকুমার বেড়াচাঁপার দেউলিয়া গ্রামে (বর্তমান চন্দ্রকেতুগড় প্রত্নস্থল, যেটি খনামিহিরের ঢিবি নামে পরিচিত)। তার পিতার নাম ছিল অনাচার্য। অন্য একটি কিংবদন্তি অনুসারে, তিনি ছিলেন সিংহলরাজের কন্যা।

রাজা বিক্রমাদিত্যের রাজ সভার প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ বরাহের ছেলে মিহিরকে খনার স্বামীরূপে পাওয়া যায়। কথিত আছে বরাহ তার পুত্রের জন্ম কোষ্ঠি গণনা করে পুত্রের আয়ু এক বছর দেখতে পেয়ে শিশু পুত্র মিহিরকে একটি পাত্রে করে সমুদ্রে ভাসিয়ে দেন। পাত্রটি ভাসতে ভাসতে সিংহল দ্বীপে পৌছলে সিংহলরাজ শিশুটিকে লালন পালন করেন এবং পরে কন্যা খনার সাথে বিয়ে দেন।

খনা এবং মিহির দুজনেই জ্যোতিষশাস্ত্রে দক্ষতা অর্জন করেন। মিহির একসময় বিক্রমাদিত্যের সভাসদ হন। একদিন পিতা বরাহ এবং পুত্র মিহির আকাশের তারা গণনায় সমস্যায় পড়লে, খনা এ সমস্যার সমাধান দিয়ে রাজা বিক্রমাদিত্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। গণনা করে খনার দেওয়া পূর্বাভাস রাজ্যের কৃষকরা উপকৃত হতো বলে রাজা বিক্রমাদিত্য খনাকে দশম রত্ন হিসেবে আখ্যা দেন।[]

মৃত্যু

সম্পাদনা

রাজসভায় প্রতিপত্তি হারানোর ভয়ে প্রতিহিংসায় বরাহের আদেশে মিহির লীলাবতীর জিহ্বা কেটে দেন। এর কিছুকাল পরে খনার মৃত্যু হয়। তবে আমৃত্যু লীলাবতী সত্যের প্রতীক হয়ে ছিলেন। তিনি এমন ভবিষ্যদ্বাণী করতেন, যা হুবহু ফলে যেত। বাঙালি লোকসংস্কৃতিতে এখনো অমৃতবাণীর মতো খনার বচনের প্রচলন রয়েছে।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. আজহার ইসলাম (২০১২)। "খনা"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  2. "ক্ষণা"bani.com.bd। ৬ জুন ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০১৭ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
  NODES