পঙ্গপাল
পঙ্গপাল হলো Acrididae পরিবারে ছোট শিংয়ের বিশেষ প্রজাতি যাদের জীবন চক্রে দল বা ঝাঁক বাধার পর্যায় থাকে। এই পতঙ্গগুলো সাধারণত একাই থাকে কিন্তু বিশেষ অবস্থায় তারা একত্রে জড়ো হয়। তখন তাদের আচরণ ও অভ্যাস পরিবর্তিত হয়ে সঙ্গলিপ্সু হয়ে পড়ে। পঙ্গপাল এবং ঘাস ফড়িংয়ের মধ্যে কোন পার্থক্যগত শ্রেণীভাগ নেই। বিশেষ অবস্থায় তাদের প্রজাতিরা একত্র হওয়ার যে প্রবণতা দেখায় সেটাই মূল পার্থক্য।
পঙ্গপাল / Locust | |
---|---|
সঙ্গমরত মরুভূমির পঙ্গপাল, Schistocerca gregaria উপরে পুরুষ ও নিচে স্ত্রী পঙ্গপাল | |
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস | |
জগৎ: | প্রাণী জগৎ |
পর্ব: | Arthropoda |
মহাশ্রেণী: | Hexapoda |
শ্রেণী: | Insecta |
বর্গ: | Orthoptera |
পরিবার: | Acrididae |
উপপরিবার: | Cyrtacanthacridinae Oedipodinae Gomphocerinae |
একা থাকা অবস্থায় এই ঘাস ফড়িংগুলো অনপকারী, তারা সংখ্যায় থাকে কম এবং কৃষির জন্য বিরাট কোন আর্থিক ক্ষতি করে না। তবে অনাবৃষ্টির পর দ্রুত ফসলের বর্ধন হলে এদের মস্তিষ্কে থাকা serotonin (সেরোটোনিন) তাদের মধ্যে আচরণগত পরিবর্তনের সূত্রপাত করে। ফলে তারা প্রচুর পরিমাণে ও দ্রুত জন্মদান শুরু করে। তখন তারা একত্রে থাকে, যখন তাদের সংখ্যা বেশি হয় তারা যাযাবর হয়ে পড়ে। এতে থাকে পাখাবিহীন ছোট পঙ্গপাল যেটা পরে পাখা জন্মে দলে যোগ দেয়। এই পাখাবিহীন এবং পাখনাসহ পঙ্গপালের দল একসাথে চলাচল করে এবং দ্রুত ফসলের মাঠের ক্ষতি করে। পূর্নবয়স্ক পঙ্গপাল শক্তিশালী উড্ডুক্কু তারা অনেক দূর পর্যন্ত উড়তে পারে আর পথে যেখানেই থামে সেখান থেকে ফসল খেয়ে শক্তি অর্জন করে।[১]
পঙ্গপালের এই মরক তৈরি করার ইতিহাস বহু পুরনো। পুরনো মিশরীয়রা তাদের কবরে এদের একেছিল। ইলিয়ড, বাইবেল এবং কুরআন ইত্যাদি গ্রন্থে এর উল্লেখ আছে। পঙ্গপালের দল ফসল ধ্বংস করে দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি করেছে যার ফলে মানুষ প্রচরণশীল হয়েছে। আরো সাম্প্রতিক সময়ে, কৃষিক্ষেত্রে নীতি পরিবর্তনের ফলে যেখানে এই দল উৎপন্ন হতে পারে তা বের করে শুরুতেই নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করা যায়। পুরনো নিয়মের মধ্যে রয়েছে বাতাসে বা মাটিতে কীটনাশক ব্যবহার। কিন্তু অন্য ব্যবস্থা যেমন জীববিজ্ঞান ব্যবস্থায় নিয়ন্ত্রণ করে ভাল ফল পাওয়া গেছে।
দল বানানোর প্রবণতা বিংশ শতাব্দিতে কমে গেছে কিন্তু আধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও পঙ্গপাল অনুকূল অবস্থায় যে কোন সময় দল গড়তে পারে যার ফলে দুর্ভিক্ষের সম্ভবনা রয়েছে। পঙ্গপাল বড় প্রাণী এবং সহজেই গবেষণা বা জীব বিদ্যায় পরীক্ষা করার কাজে শ্রেণীকক্ষে ব্যবহৃত হতে পারে। এদের খাওয়াও যায়; ইতিহাসে তাই দেখা যায়। কিছু কিছু দেশে এদের খাদ্য হিসেবে অত্যন্ত উপাদেয় বিবেচনা করা হয়। ইংরেজি "locust" বা পঙ্গপাল শব্দটি এসেছে Vulgar Latin শব্দ locusta (লোকাস্টা) থেকে, যার অর্থ লবস্টার (lobster) বা লোকাস্ট ।[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Antsey, Michael; Rogers, Stephen; Swidbert, R.O.; Burrows, Malcolm; Simpson, S.J. (৩০ জানুয়ারি ২০০৯)। "Serotonin mediates behavioral gregarization underlying swarm formation in desert locusts"। Science। 323 (5914): 627–630। ডিওআই:10.1126/science.1165939। পিএমআইডি 19179529। বিবকোড:2009Sci...323..627A।
- ↑ "Online Etymology Dictionary"। Etymonline.com। সংগ্রহের তারিখ ১২ অক্টোবর ২০১১।
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ভিসুয়াল নিউরন অব দ্য লোকাস্ট[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], রি চ্যানেলের ভিডিও
- এফএও লোকাস্ট ওয়াচ
- এফএও এমপ্রেস ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ মার্চ ২০১০ তারিখে
- সাহেল রিসোর্সে ডেজার্ট লোকাস্ট মেটারোলজিক্যাল মনিটরিং
- ইউটিউবে পঙ্গপালের ভিডিও
- ইউএসএইডের পরিপূরক পরিবেশগত মূল্যায়ন: এরিটরিয়ান পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি
- ইউএসএইড-এর পরিপূরক পরিবেশগত মূল্যায়ন: পাকিস্তানের পঙ্গপাল নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (আগস্ট ১৯৯৩)
- When The Skies Turned To Black, The Locust Plague of 1875
এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |